বেকার

বেকার মূলত দুই প্রকার!
 যথা:- 
১) শিক্ষিত বেকার!
২) অশিক্ষিত বা অক্ষর জ্ঞান হীন বেকার।

শিক্ষিত বেকার আবার তিন প্রকার! 
যথা :- 

১) লাজুক বেকার। 
২) আলসে, নেশাগ্রস্থ, কাজকর্মে অনিচ্ছুক বেকার।
৩) বুদ্ধিজীবী বেকার।

লাজুক বেকার :- 
করিতে পারিনা কাজ, সদা ভয় সদা লাজ টাইপের! শিক্ষিত হয়ে কেউ ধানের বস্তা ভাঙ্গাতে চালকলে যায়?
হাসমুরগী পালে? যদি এগুলাই করতে হয়, তবে লেখাপড়া করলাম কেনো?
অর্থাৎ এদের মনে এই নীতিকথা চেপে গেছে, " লেখাপড়া করে যে, গাড়িঘোড়া চড়ে সে!"
আলসে বেকার:-
কি হবে কাজ করে? টাকা পয়সা দিয়ে কি হবে?
বাবার ব্যবসা ত আছেই? ভাই ত চাকুরী করেই, মামা বিদেশ!
অর্থাৎ, তারা ভাবে কেউ না কেউ তাদের বসিয়ে বসিয়ে খাওয়াবে।
এইভাবে বসে বসে ঘুণে ধরে, পরে ফেন্সি গাজা খেয়ে খেয়ে দার্শনিকের মতো মা বাবা আর সরকারের গোষ্ঠী উদ্ধার করে!
বুদ্ধিজীবী বেকার :-
ত যা বলছিলাম, কারা এই বুদ্ধিজীবী বেকার জানেন? যারা সব ধরনের বিদ্যা পাস, অর্থাৎ রাজনীতি, অর্থনীতি, ধর্মশাস্ত্র, ভূগোল, ইতিহাস, সাহিত্য, দর্শন, মহাবিশ্ব, চিকিৎসা বিজ্ঞান তথা এমন কোন বিদ্যা নেই যে উনাদের যানা নেই।
এমনকি বাঘা বাঘা বি সি এস ক্যাডার ও এদের ভাবশিষ্য!
আর এদের পরিচয় পাবেন চায়ের টঙ এ, রাস্তার মোড়ে, খেলার মাঠে, নেতাদের মিটিং এর টেবিলে।
এরা কোন কাজ কর্ম করে না বটে, তবে যথেষ্ট পয়সা খরচ করে! এবং অপেক্ষায় থাকে বড় একটা সুযোগের!
এইসব কিছু পর্যালোচনা করার কারণ হলো বাংলাদেশে মামা, ঘুষ আর সরকারের উপর নির্ভরশীল মানুষের সংখ্যা বেশি।
এর মূল কারণ এই সব চিন্তাধারার মানুষ দেশে বেশী!
কেউ আত্ননির্ভরশীল হতে চায় না।
মুরগী পাললে মুরগীর ব্যাপারী, চুল কাটলে নাপিত, মাছ চাষ করলে জেলে ইত্যাদি আমাদের সামাজিক অসুখী চর্চা।
কোরিয়া জাপানে মেথরের কাজ সবচেয়ে সম্মানের!
ইউরোপে আমেরিকায় মেথর বা চামারের কাজকে বিশেষ সম্মানের দৃষ্টি তেই দেখা হয়।
কিন্তু আমাদের সমাজে কেউ মেথরের কাজ দূরে থাক-- নাপিত বা জেলের কাছে ও ঘেষে না! আর বিয়ে দিলে ত সমাজ থেকে এক ঘরেই করে দিবে।
টাঙ্গাইলের কাপড় বুনার তাঁতিদের একটা পাড়া আছে! এদের ডাক নাম জোলা।
এই বিংশ শতাব্দী তেও এদের সাথে মূল বাসিন্দারা কোন আত্নিয়তার সম্পর্ক স্থাপন করে না।
এটা শুধু একটা উদাহরণ মাত্র।
এমনকি সম্মানের চাকুরী নার্স বা লাশ কাটার ডোম থেকেও সাধারণ মানুষ অনেক দূরে অবস্থান করে।
কিন্তু কেনো??????
চাকুরী ছাড়া ও হাজারো রাস্তা আছে আত্ননির্ভরশীল হওয়ার! কিন্তু বসে বসে ফুলবাবু সেজে ঘুরলে মানুষ বড়লোক ভদ্র লোক মনে করে---- এই ধারনাগত লোক এই সমাজে বেশী।
এতদিন যা একটু প্রবাসী দের সম্মানের চোখে দেখা হতো, এখন তার ও সুযোগ নেই।
মিডিলইস্ট বা মালয়েশিয়া সিঙ্গাপুর থেকে আসলে প্রথমেই নাক সিটকায়,,, বাড়িতে কত বড় বিল্ডিং আছে সেটা দেখে!
কেউ মেয়ে দিতে চায় না, তাদের ধারনা -- এইসব দেশে মানুষ শুধু কামলা খাটে,, আর বউ পরের হাত ধরে পালিয়ে যায় শেষে উপায় না পেয়ে।
অবশ্য ইউরোপ আমেরিকার হলে ঠিক আছে।
মূলত : আমরা বেকারত্ব কে উৎসাহিত ই করি না, সার্বিক দিক দিয়ে বেকার বানায়।
তাই কেউ যখন বলে ছেলেটা বেকার, তখন নিজের কল্পনাতেই ভেসে উঠে----- বেকার ই একমাত্র অবলম্বন!
তাছাড়া কিই বা করার আছে আমাদের?
যতদিন না এই আমাদের ভিতরে ছোট ছোট কর্মকে মূল্য দেয়ার মানুষিক মূল্যবোধ গড়ে উঠছে, ততদিন কার্যত আমরা অচল একটা অথর্ব জাতী।

Comments

Popular posts from this blog

দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা

আব্রাহাম লিংকন এর চিঠি

একটি মূহুর্ত...